রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:১৫ অপরাহ্ন
সোহেল খান দূর্জয় নেত্রকোনা :
নেত্রকোনা জেলার ০৪.০২.২০২৩ ইং বিভিন্ন হাটে বাজারে বিক্রয় হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের অতিথি পাখি। আইন থাকলেও যথারিতী প্রয়োগ হচ্ছে না। জেলার বিভিন্ন বিল, হাওড়, বাউড় ও নদী নালায় এখন অতিথি পাখিরা আসতে শুরু করেছে। অর্থলুভী সুযোগ সন্ধানী এক শ্রেণীর শৌখিন ও পেশাদার পাখি শিকারিরা বন্দুক, বিষটোপ, জাল ও বিভিন্ন ধরনের ফাঁদ পেতে এসব পাখি শিকার করে বাজারে বিক্রয় করছে। ১৯৭৪ সালে বন্য প্রানী রক্ষা আইন ও ২০১২ সালে বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে পাখি শিকারে দন্ডের বিধান রয়েছে। এই আইনে উল্লেখ আছে পাখি শিকার বা নিধনের সর্বোচ্ছ শাস্তি ১বছর কারাদন্ড ও ১ লক্ষ নগত টাকা জরিমানা। কিন্ত বাস্তবে এই আইনের কোন প্রয়োগ নেই।
নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা, মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরী ,মদন, কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, আটপাড়া, কেন্দুয়া, পূর্বধলা ও সদর উপজেলার বিভিন্ন বিলে এখন ঝাকে, ঝাকে অতিথি পাখি আসতে শুরু করেছে । সেখানে প্রকাশ্যে অতিথি পাখি শিকার করা হচ্ছে। শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সদর উপজেলার সতরশ্রী বাজারে পাখি বিক্রয় হচ্ছে এমন সংবাদ পেয়ে সেখানে গিয়ে দেখা গেছে পাখি বিক্রয় হচ্ছে। পাখি বিক্রয় কারিদের একজনকে পাওয়া গেলেও বাকিরা ততক্ষণে ৮০/৯০ টি বিভিন্ন জাতের পাখি বিক্রয় করে চলে গেছে। এই পাখি শিকার করতে মানুষ রাতে জাল পেতে রাখে।এখানে যেসব পাখি বিক্রির বাকি রয়েছে সেগুলো রবিবার সকালে জেলার বিভিন্নস্থানে বিক্রয় করা হবে।
মোহনগঞ্জ উপজেলার বড়তলী বানিয়াহরী ইউনিয়নের পাখি শিকারী জহিরুল ইসলাম জানায়, আমরা রাতে বিলে ফাঁদ থেতে জাল দিয়ে পাখি শিকার করি। প্রতিটি পাখির দাম ৩০০/ ৩৫০ টাকা বিক্রয় করা হয়। তিনি জানান এই পাখি ধরে তাদের সংসার চলে।
নেত্রকোনা পরিবেশ ও জীববৈচিত্র রক্ষা কমিটির সভাপতি জানান, জেলার বিভিন্ন বিল বাওড়ে হাজার হাজার অতিথি পাখি এসেছে। আমাদের দেশের বিভিন্ন বিলে শীতের শুরুতেই বিলের পানি কমতে শুরু করে আর এসময় অল্প পানিতে খাবার সংগ্রহের জন্য অনেক দেশি বিদেশি অতিথি পাখি আসে। এইসব পাখি যেন শিকার না করে সেই দিকে কর্তপক্ষের মনিটারিং করা উচিত।
সাহতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান চঞ্চল জানান, পাখি নিধন কোন মতেই গ্রহন যোগ্য নয়। আমার ইউনিয়নে কেউ যদি এমন অন্যায় ভাবে পাখি শিকার করে, তা বাজারে বিক্রয় করে তার যেন শান্তি হয় আমি সে ব্যবস্থ করবো। আর প্রশাসনের অনুরোধ করবো হাট বাজারে কেউ পাখি বিক্রয় করতে এলে তাকে বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে বিচার করার আহবান করছি।
নেত্রকোনা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ ওয়াহেদুল আলম জানান, পাখি শিকার করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ১৯৭৪ সালে বন্য প্রানী রক্ষা আইন ও ২০১২ সালে বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে পাখি শিকারে দন্ডের বিধান রয়েছে। এই আইনে উল্লেখ আছে পাখি শিকার বা নিধনের সর্বোচ্ছ শাস্তি ১বছর কারাদন্ড ও ১ লক্ষ নগত টাকা জরিমানা। কিন্তু এই আইন যথাযথ প্রয়োগ না হওয়ায় পাখি শিকার বন্ধ হচ্ছে না। তবে আমাদের কাছে সঠিক তথ্য দিয়ে সহযোগীতা করলে আমরা সাথে সাথে তার ব্যবস্থা নিব। সেই সাথে জেলার সাধারণ ব্যাক্তিরা যদি সচেতন হয় তাহলে এই পাখি শিকার অনেকটাই বন্ধ হয়ে যাবে।